আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
‘পাগল তত্ত্ব’ নিয়ে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। এই বিশ্লেষণটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘিরে। তার চিন্তাভাবনা পরিবর্তন ও স্ববিরোধী কাজ এবং তার কথা আর কাজে মিল নেই। অর্থাৎ তার অননুমেয় আচরণ যেন স্বাভাবিক।
এমন আচরণ কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা ‘ম্যাডম্যান থিওরি’ বা ‘পাগল তত্ত্ব’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
‘পাগল তত্ত্ব’ কি?
পাগল তত্ত্বের ভিত্তি হল, আপাতদৃষ্টিতে অ-বিশ্বাসযোগ্য হুমকিকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে। এছাড়াও পারস্পরিক আশ্বস্ত ধ্বংসের যুগে, যুক্তিবাদী নেতার দ্বারা বিরোধ বাড়ানোর হুমকি আত্মঘাতী বলে মনে হতে পারে। এইভাবে প্রতিপক্ষের দ্বারা সহজেই প্রত্যাখ্যান করা যায়।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, যেখানে একজন বিশ্বনেতা তার প্রতিপক্ষকে বোঝাতে চান যে, তিনি তার মেজাজ-মর্জি অনুযায়ী যেকোনো কিছু করতে পারেন। এতে করে প্রতিপক্ষ ভয় পেয়ে ছাড়ও দিতে পারে।
কেন ‘পাগল তত্ত্ব’ ব্যবহার করতে চান ট্রাম্প:
ইরানে ইসরায়েল বাহিনীর আক্রামণ চলাকালে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইরানে হামলায় তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন কি না?
জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি এটা করতে পারি। আবার আমি না-ও করতে পারি। আমি কী করতে যাচ্ছি, তা কেউই জানে না।’
ট্রাম্প বিশ্বকে এমনটা বিশ্বাস করতে দিয়েছিলেন যে, ইরানকে আলোচনা শুরুর সুযোগ দিতে দুই সপ্তাহ হামলা স্থগিত রাখার বিষয়ে তিনি সম্মত হয়েছেন। কিন্তু পরে এ সময়ের মধ্যেই তিনি ইরানের ওপর হামলা চালিয়ে বসেন।
বিবিসিতে প্রকাশিত অ্যালেন লিটলের এক লেখায় ‘ম্যাডম্যান থিওরি’ কীভাবে ট্রাম্প কাজে লাগাচ্ছেন তা স্পষ্ট করে তুলে ধরেন।
তিনি লিখেন, ‘কথার আক্রমণ, অপমান ও কাছে টানা’ ট্রাম্পের অন্যতম কৌশল। আমেরিকার মিত্রদের কথার আক্রমণ যেন দুধভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি কানাডাকে অপমান করে বলেছিলেন, দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়া উচিত। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কাছে টেনে নেন তিনি।
এখন এই খামখেয়ালি স্বভাবই হোয়াইট হাউসে বসে আমেরিকার বিদেশ ও নিরাপত্তা নীতি চালাচ্ছেন ট্রাম্প। আর সেটি বিশ্বের চেহারা পাল্টে দিচ্ছে।
ট্রাম্প যা করেছেন, তা হলো যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বড় ধরনের সন্দেহ ও প্রশ্ন তৈরি করেছেন,” বলে মন্তব্য করেছেন লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোভিট্জ।
তিনি বলেন, যে কোন নীতিগত সিদ্ধান্তগুলো অনেক বেশি নির্ভর করে ট্রাম্পের চরিত্র, তার পছন্দ এবং মেজাজের ওপর।
টিবিএম /জ/রা


